Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
অবৈধ উপার্জন
ছবি
ডাউনলোড

# অবৈধ উপার্জনের ৮ টি ক্ষতি:
হারাম উপার্জনে দুনিয়া-আখিরাত ধ্বংস করে দেয়। এরপরও কিছু মানুষ এ কাজ করে থাকে। অনেকে চাকরি করার আগে সেখানে বৈধ বেতনের সঙ্গে অবৈধ কত টাকা উপার্জন করতে পারবে সে হিসাব করে। অথচ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে মুমিনরা! আহার কর আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তারই ইবাদত করো। (সুরা বাকারা -১৭২) এই আয়াতে মহান আল্লাহ আমাদের জন্য হালাল খাবার, হালাল উপার্জন ফরজ করেছেন। এখানে অবৈধ উপার্জনের ৮টি ক্ষতি আলোচনা করা হলো-
১। দোয়া কবুল হয় না: যারা হারাম পন্থায় উপার্জন করে মহান আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করে না। রাসূল (সা:) এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, দীর্ঘ সফরের ক্লান্তিতে যার মাথার চুল বিক্ষিপ্ত, অবিন্্যাস্ত ও সারা শরীর ধূলামলিন। সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার প্রভু! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য ও পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, তার জীবন জীবিকাও হারাম। এমতাবস্থায় তার দোয়া কিভাবে কবুল হতে পারে?” (তিরমিজি-২৯৮৯)
২। বরকত কমে যায়: মহান আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন আর দান-সদাকা বাড়িয়ে দেন।” (সুরা বাকারা-২৭৬) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, যে সম্পদের সঙ্গে সুদ মিশ্রিত হয়ে যায় বেশিরভাগ সময় সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। অধিকন্তু আগে যা ছিলো তাও সঙ্গে নিয়ে যায়। সুদ ও জুয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় অজ¯্র পুজির মালিক কোটিপতি দেখেতে দেখতে দেউলিয়া ও ফকিরে পরিণত হয়। এভাবে হারাম উপার্জন মানুষের রিজিক কমিয়ে দেয়।
৩। অনিবার্য ধ্বংস: হারাম উপার্জন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। মহান আল্লাহ হারাম উপার্জনকারীদের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “ হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও যদি তোমরা মুমিন হও। অত:পর যদি তোমরা তা না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও....। (সুরা বাকারা: ২৭৮-২৭৯)
৪। আল্লাহর অসন্তুষ্টি: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সঙ্গে করা প্রতিশ্রæতি এবং নিজেদের শপথের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য খরিদ করে আখিরাতে তাদের কোন অংশ নেই। আর আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেন না কেয়ামতের দিন। আর তাদের পরিশুদ্ধিও করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।” (সুরা আল ইমরান-৭৭)
৫। রাসূল (সা:) এর অভিশাপ: যারা সুদভিত্তিক লেনদেনে লিপ্ত রাসূল (সা:) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। জাবের (রা:) বলেন, রাসূল (সা:) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও তার স্বাক্ষীদ্বয়ের উপর অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন এরাই সবাই সমান অপরাধী। (সহীহ মুসলিম-৩৯৮৫)  অন্য হাদিসে রাসূল (সা:) বলেছেন, “ ঘুষদাতা ও গ্রহীতার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” (ইবনে মাজাহ-২৩১৩)
৬। কবরের শাস্তি: হারাম উপার্জন মানুষকে যেভাবে দুনিয়াতে শাস্তি দেয় তেমনি কবরেও তাদের জন্য রয়েছে ভয়াভহ শাস্তি। সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রা:) বলেন নবী (সা:) বলেছেন,“ আজ রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি, দুই ব্যক্তি আমার কাছে আগমন করে আমাকে এক পবিত্র ভুমিতে নিয়ে গেল। আমরা চলতে চলতে এক রক্তের নদীর কাছে পৌছঁলাম। নদীর মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং আরেক ব্যক্তি নদীর তীরে, তাঁর সামনে পাথর পড়ে রয়েছে। নদীর মাঝখানের লোকটি যখন বের হয়ে আসতে চায় তখন তীরের লোকটি তার মুখে পাথর খন্ড নিক্ষেপ করে তাকে সস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যতবার সে বেরিয়ে আসতে চায় ততবারই তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করছে আর সে সস্থানে ফিরে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এ ব্যক্তি কে? সে বলল, যাকে আপনি রক্তের নদীতে দেখেছেন, সে হলো সুদখোর। (সহীহ বুখারি-২০৮৫)
৭। আখিরাতের শাস্তি: আখিরাতেও অবৈধ উপার্জনকারী কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। খাওলা আনসারিয়া (রা:) বলেন, “আমি নবী (সা:) কে বলতে শুনেছি, কিছু লোক আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কেয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।” (সহীহ বুখারি-৩১১৮)
৮। দান-সদাকা কবুল হয় না: অনেকে মনে করেন হারাম পথে উপার্জন করে সেখান থেকে কিছু সদাকা করে দিলে হয়তো কিছুটা হালকা হবে অথবা আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু ব্যাপারটা এরকম নয়। রাসূল (সা:) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা ছাড়া কোন সালাত কবুল করেন না এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সদকা গ্রহণ করেন না। (নাসাঈ-১৩৯)
অতএব আমাদের সবার উচিৎ হারাম উপার্জন থেকে দুরে থাকা। কারণ এর দ্বারা সাময়িক স্বচ্ছলতা অর্জিত হলেও এর ক্ষতি চিরস্থায়ী। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হালাল উপার্জন করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)